কৃষ্ণের জীবনের প্রারম্ভে তেমন প্রাচুর্য না থাকার কারণেই সম্ভবত তিনি অনাড়ম্বর জীবনেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। যদিও পরবর্তীকালের পণ্ডিতদের কল্পনায় কৃষ্ণের পরিহিত বহুমূল্য বস্ত্রাদির উল্লেখ পাওয়া যায়, কিন্তু প্রাচীন গ্রন্থগুলি থেকে তেমন কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়না। তাঁর বস্ত্রের বর্ণ ছিল হলুদ (পীতাম্বর), খুব সম্ভবত তাঁর কৃষ্ণ গাত্রবর্ণের সঙ্গে মানানসই হত বলে। তাঁর ভূষণ ছিল যৎসামান্য। তিনি বনপুষ্পমাল্যে ও মৌরমুকুটে সুশোভিত হতেই পছন্দ করতেন।
গীতায় কৃষ্ণ...
গোপালকদের মাঝে বেড়ে ওঠা কৃষ্ণ ছিলেন প্রকৃত অর্থেই একজন ভূমিপুত্র। শিশুকাল থেকেই যেন প্রকৃতির সাথে তাঁর আত্মিক যোগ। শৈশবেই তিনি প্রাকৃতিক পরিবেশকে শ্রদ্ধা করতে শিখেছিলেন। ভাগবত পুরাণের একটি অধ্যায়ে তাঁকে একটি সুপ্রাচীন বটবৃক্ষের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে দেখা যায় (ভা.পু. ১০.২২)। বৃক্ষ, গাভী ও মানুষের প্রতি কৃষ্ণকে সশ্রদ্ধ হতে দেখা যায়। সশ্রদ্ধ হতে দেখা যায় সমগ্র সৃষ্টির প্রতি। এমনকি, যুদ্ধে পরাজিত করার পরেও তিনি কালিয়ানাগকে বধ করেননি, বরং...
এমন কিছু মানুষ থাকেন যাঁদের বয়সের সাথে পূর্ণতা লাভ করার প্রয়োজন পড়েনা, জন্মের সাথে সাথেই যাঁরা সম্পূর্ণ, আত্মজ্ঞানে পরিপূর্ণ। আন্তর বিবর্তন ও মানসিক বৃদ্ধি তাঁদের নিষ্প্রয়োজন, কারণ তাঁরা ইতিমধ্যেই বিবর্তিত। কৃষ্ণ হলেন তাঁদেরই একজন। শৈশবাবস্থার কৃষ্ণলীলা আমাদের সবিস্তারে পরিচিত হলেও, তাঁর তৎকালীন চিন্তাধারা আমাদের অবগত নয়। আমরা যেটুকু বুঝতে পারি সেটা হচ্ছে, তিনি ছিলেন এমন একজন মানুষ যিনি শৈশবাবস্থা থেকেই সকল উত্থান-পতন কে জীবনের অঙ্গ হিসেবে মেনে...
আমাদের অনেকের কাছেই কৃষ্ণ হলেন হিন্দুধর্মাদর্শের প্রতীক। তাঁর প্রতিটি চিন্তাধারায়, বাণীতে ও কর্মে হিন্দুমতাদর্শ প্রতিফলিত হয়। তাই এতে এমন কিছু আশ্চর্য লাগেনা, যখন দেখা যায় যে, ভারতযুদ্ধকালীন অর্জুনকে প্রদত্ত তাঁর পরামর্শ গুলি হিন্দু-ভাবনার সর্বশ্রেষ্ঠ সারকথা রূপে পূজিত হয়। ভগবদ্গীতার বর্তমান রূপ-টির প্রতিটি শব্দই যে কৃষ্ণ কর্তৃক উচ্চারিত হয়েছিল, তা আজ জোর দিয়ে বলা না গেলেও, খুব সম্ভবত এটাই মনে হয় যে, অন্তত গীতার মূল সার-টি কৃষ্ণেরই বাণী। আমরা...